আগামী তিন বছর, প্রতি বছর ৩ লাখ নথিবিহীন অভিবাসীকে বৈধতা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে স্পেন।
বুধবার ২০ নভেম্বর দেশটির অভিবাসী বিষয়ক মন্ত্রী এলমা সেইজ রাজধানী মাদ্রিদে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষনা দিযেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে এলমা সেইজ বলেন, আমাদের সামনে দু’টি বিকল্প রয়েছে—একটি মুক্ত ও উন্নত দেশ হিসেবে স্পেনকে বিশ্বের সামনে পরিচিত করা অথবা একে একটি বদ্ধ ও দরিদ্র দেশে পরিণত করা। আমরা প্রথম বিকল্পটি বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
নীতিটি আগামী মে থেকে কার্যকর হবে। অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলি অবৈধ ক্রসিং এবং আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য তাদের সীমানা কঠোর করার চেষ্টা করলেও স্পেন অভিবাসীদের গ্রহণের জন্য অনেকাংশে উন্মুক্ত রয়েছে।
অভিবাসন মন্ত্রী এলমা সাইজ বলেছেন, স্পেনের কল্যাণ রাষ্ট্র বজায় রাখার জন্য, একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও কল্যাণমুখী রাষ্ট্র হিসেবে স্পেনকে গড়ে তোলার জন্য আমাদের প্রতি বছর আড়াই লাখ বিদেশি কর্মী প্রয়োজন।
তিনি যুক্তি দিয়েছেন যে বৈধকরণ নীতির উদ্দেশ্য শুধুমাত্র "সাংস্কৃতিক সম্পদ এবং মানবাধিকারের প্রতি সম্মান নয়, এটি সমৃদ্ধিও।
তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, দেশে এখন যতসংখ্যক নথিবিহীন অভিবাসী রয়েছে, তাদেরকে পর্যায়ক্রমে স্পেনে বৈধভাবে বসবাসের সুযোগ এবং ওয়ার্ক পার্মিট প্রদানের। এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন থেকে প্রতি বছর গড়ে ৩ লাখ অভিবাসীকে বৈধভাবে স্পেনে বসবাস ও কাজ করার সুযোগ দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে এলমা সেইজ জানান, যেসব নথিবিহীন অভিবাসী অন্তত দুই থেকে তিন বছর ধরে স্পেনে বসবাস করছেন, বৈধতা প্রদানের ক্ষেত্রে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানজেচ এই বিশেষ প্রকল্পের নাম দিয়েছেন ‘সার্কুলার মাইগ্রেশন’। সাম্প্রতিক কয়েকটি কর্মসূচিতে স্পেনের বর্তমান নিম্ন জন্মহার এবং বয়স্ক লোকজনের অবসর গ্রহণের জেরে অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে কর্মী সংকট চলছে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ প্রায়শই তার সরকারের অভিবাসন নীতিগুলিকে দেশের নিম্ন জন্মহারের বিরুদ্ধে লড়াই করার উপায় হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
প্রসঙ্গত, ইউরোপের যেসব দেশে নথিবিহীন অভিবাসীর সংখ্যা অতিমাত্রায় বেশি, সেসবের মধ্যে স্পেন অন্যতম। প্রতিদিন বিমান, স্থলপথ ও আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে শত শত অভিবাসন প্রত্যাশী ঢুকছেন স্পেনে। এ তালিকায় স্পেনের পাশে রয়েছে যুক্তরাজ্য এবং ইতালিও। সরকারের মতে, ২০২৩ সালে, স্পেন বিদেশীদের জন্য ১.৩ মিলিয়ন ভিসা ইস্যু করেছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসে স্পেনে প্রবেশ করেছেন অন্তত ২৫ হাজার নথিবিহীন অভিবাসী। তাদের মধ্যে ১৯ হাজারেরও বেশি এসেছেন সাগর পাড়ি দিয়ে।
সূত্র : এপি, রয়টার্স,