National Online News Portal of Bangladesh - বাংলাদেশের জাতীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল - بوابة الأخبار الوطنية على الإنترنت لبنغلاديش - बांग्लादेश का राष्ट्रीय ऑनलाइन समाचार पोर्टल - بنگلہ دیش کا قومی آن لائن نیوز پورٹل
ছবি: সংগৃহিত

ইজতেমা মাঠে জুবায়ের-সাদপন্থীদের সংঘর্ষে নিহত ৩ : ৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন

  ।।বিকে রিপোর্ট।।   বুধবার | ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪ | ১২:৪১ পিএম

ইজতেমা মাঠ দখলকে কেন্দ্র করে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে জুবায়ের ও সাদপন্থীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ৩ জন মুসল্লি নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও শতাধিক।

এদিকে বিশ্ব ইজতেমা মাঠ দখলকে কেন্দ্র করে তাবলিগ জামাতের জুবায়ের ও সাদপন্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের পর টঙ্গীতে চার প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে।

বুধবার ১৮ ডিসেম্বর সকালে বিজিবি সদরদপ্তর থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়। বার্তায় বলা হয়েছে, তাবলিগ জামাতের জুবায়ের ও সাদপন্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় টঙ্গীতে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রয়েছে।

এর আগে বুধবার ১৮ ডিসেম্বর ভোররাত ৪টার দিকে ইজতেমার ময়দান দখল নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হলে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে। তাবলিগ জামাতের যোবায়েরপন্থিদের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান ও মাওলানা সাদপন্থিদের মিডিয়া সমন্বয়ক আবু সায়েম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সংঘর্ষে নিহতরা হলেন—কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্দু গ্রামের বাচ্চু মিয়া (৭০) ও ঢাকার দক্ষিণ খানের বেড়াইদ এলাকার বেলাল (৬০) ও বগুড়া জেলার তাজুল ইসলাম (৭০)।

আহতরা হলেন—আ. রউফ (৫৫), মজিবুর রহমান (৫৮), আ. হান্নান (৬০), জহুরুল ইসলাম (৩৮), আরিফ (৩৪), ফয়সাল (২৮), তরিকুল (৪২), সাহেদ (৪৪), উকিল মিয়া (৫৮), পান্ত (৫৫) টঙ্গী, খোরশেদ আলম (৫০) বেলাল (৩৪), আনোয়ার (৫০), আবু বক্কর (৫৯), আরিফুল ইসলাম (৫০), আনোয়ার (২৬), আনোয়ার (৭৬), ফোরকান আহমেদ (৩৫), আ. রউফ (৫৫) মজিবুর রহমান (৫৮), আ. হান্নান (৬০), জহুরুল ইসলাম (৩৮), আরিফ (৩৪),  ফয়সাল (২৮), তরিকুল (৪২), সাহেদ (৪৪)।

এদিকে জুবায়েরপন্থীদের মধ্যে আহতরা হলেন- নুরুল হাকিম (৩০), সালাউদ্দিন ভূঁইয়া (৫০), সাদ (২১) ও সিয়াম( ২৪)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে সাদপন্থিরা তুরাগ নদীর পশ্চিম তীর থেকে কামারপাড়া ব্রিজসহ বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে ইজতেমা মাঠে প্রবেশ করতে থাকেন। এ সময় মাঠের ভেতর থেকে যোবায়েরপন্থিরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। জবাবে সাদপন্থিরাও পাল্টা হামলা চালান। একপর্যায়ে সাদপন্থিরা মাঠে প্রবেশ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে তিনজন নিহত ও শতাধিক মুসল্লি আহত হন।

নিহত আমিনুল ইসলাম বাচ্চুর লাশ শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র ব্রাদার জানান, নিহত তিনজনের মধ্যে দুজন হাসপাতালে এবং একজন ঢাকা নেওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সে মারা যান।

তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ (শুরায়ী নেজাম) জুবায়েরপন্থীর মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বুধবার ভোর ৪টায় আমাদের ঘুমন্ত মুসল্লি ও সাথী ভাইদের ওপর সাদপন্থীরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে আমাদের এক ভাইকে খুন করেছেন এবং অনেককে হত্যার উদ্দেশ্যে রক্তাক্ত করেছেন। তাদেরকে চিকিৎসার জন্য আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে তাদের নাম-পরিচয় গণমাধ্যমকে জানানো হবে।’

ইজতেমা ময়দানে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সত্যতা নিশ্চিত করে টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসকান্দার হাবিবুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, ‘বুধবার ভোররাত চারটার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে এই পর্যন্ত ৩ জন মুসল্লি মারা গেছে বিস্তারিত পরে জানানো হবে। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।

সাদপন্থিদের প্রভাবশালী মুরুব্বি মুয়াজ বিন নূর এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, আমরা এখন ইজতেমা মাঠের নিয়ন্ত্রণে আছি। যোবায়েরপন্থিদের আক্রমণে আমাদের তিন ভাই শহীদ হয়েছেন। ময়দানে অনেক যোবায়েরপন্থি চাকু ও ছোড়াসহ আটক হয়েছেন বলে দাবি করেন মুয়াজ বিন নূর।

উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি হিসেবে ৩ ডিসেম্বর মাওলানা জোবায়েরপন্থীদের জোর ইজতেমা শেষ হয়েছে। আগামী ২০ ডিসেম্বর সাদপন্থীদের জোর ইজতেমা আয়োজন করার উদ্দেশ্যে ইজতেমার মাঠ বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য প্রশাসনসহ জুবায়েরপন্থীদের অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা ইজতেমা মাঠ কোনো অবস্থাতেই সাদপন্থীদেরকে বুঝিয়ে দেবেন না বলে ঘোষণা দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে উভয় পক্ষের মধ্যে একাধিকবার হামলা ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।