যশোর জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার একটি ভিডিও নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, মুখ ঢাকা একজন আরবি ভাষায় বক্তব্য দিচ্ছেন। তার পাশে দুই জন কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে অস্ত্র হাতে গার্ডের মতো দাঁড়িয়ে আছেন।
বুধবার ১৮ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ৮টার দিকে ‘ডা. ইলিশ নজরুল’ নামে একটি ফেইসবুক আইডি থেকে ছড়িয়ে পড়া ৫ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের ওই ভিডিও ফুটেজটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
পোস্ট করা ওই ভিডিওটির শিরোনামে লেখা হয়েছে ‘দেশে জঙ্গির অবাধে চাষবাস’। তবে ভিডিওটি অনুষ্ঠানের যেমন খুশি তেমন সাজ’র একটি অভিনয়ের অংশ হিসেবে দাবি করে প্রতিউত্তর দিয়েছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
যশোর জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার শিক্ষাসচিব মাওলানা মাকফুর রহমান জানান, ১৬ ডিসেম্বর থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত যশোর জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসায় বাৎসরিক প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠান ছিল। এ অনুষ্ঠানের একটি অংশে আরবি ভাষায় বক্তৃতা দেওয়ার একটি অভিনয় ছিল। এটি যেমন খুশি তেমন সাজো অনুষ্ঠানের একটি অংশ বলেও দাবি করেন তিনি।
এই মাদ্রাসার শিক্ষা সচিব মাকফুর রহমান বলেন, প্রতিবছর শিক্ষার্থীদের নিয়ে বার্ষিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সেখানে যারা উপস্থিত বক্তৃতা, হামদ, নাত, গজল ও অভিনয়ে ভালো করে তাদের পুরস্কৃত করা হয়। গত ১৭ ডিসেম্বর এই মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ছাত্ররা ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী মানুষের পক্ষে লড়াই সংগ্রামের বিষয়টি অভিনয় করে দেখায়। এটি অভিনয় ছাড়া কিছুই নয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাদের হাতে থাকা অস্ত্রগুলো কাঠ, শোলা ইত্যাদি দিয়ে তৈরি ছিল।
জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি লুৎফুর রহমান ফারুকী বলেন, ১৬ ডিসেম্বর এই মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে আজীবন সদস্যদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই মঞ্চেই বার্ষিক আঞ্জুমানের আয়োজন করা হয়। আঞ্জুমানে শিক্ষার্থীদের প্রতিভা বিকাশ হয়। এতে যারা ভালো করে তাদের পুরস্কৃত করা হয়। বিষয়টি কোনো খারাপ উদ্দেশে নিয়ে করা হয়নি।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, ভিডিওটি ফেসবুকে দেখেছি। মাদ্রাসার ছাত্রদের একটি প্রতিযোগিতার অংশ এটি। তারা ডামি অস্ত্র ব্যবহার করে অভিনয় করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোর শহরতলীর রাজারহাট বিহারি কলোনি এলাকায় ২০১২ সালে যশোর জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। কওমি মাদ্রাসা হিসেবে এখানে প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন। এখানে মূলত হাফেজ, মাওলানা ও মুফতি ডিগ্রি দেওয়া হয়।