National Online News Portal of Bangladesh - বাংলাদেশের জাতীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল - بوابة الأخبار الوطنية على الإنترنت لبنغلاديش - बांग्लादेश का राष्ट्रीय ऑनलाइन समाचार पोर्टल - بنگلہ دیش کا قومی آن لائن نیوز پورٹل
ছবি: সংগৃহিত

সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব ঘিরে চরম ক্ষোভ, জনপ্রশাসন সচিবের কার্যালয়ে অবস্থান

  ।।বিকে রিপোর্ট।।  রবিবার | ডিসেম্বর ২২, ২০২৪ | ০৩:১০ পিএম

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের খসড়ায়  প্রস্তাবিত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা।

রবিবার ২২ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১১টার পর থেকে সচিবালয়ের তিন নম্বর ভবনের সামনে জড়ো হন তারা।

বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আনোয়ার উল্লার নেতৃত্বে কর্মকর্তারা উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের কোটা কমানোর প্রতিবাদে তাঁদের দাবি-দাওয়া জনপ্রশাসন সচিবের কাছে তুলে ধরবেন।সংযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, কয়েকশ’ কর্মকর্তা সচিবালয়ের লাইব্রেরিতে অবস্থান নিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ১৭ ডিসেম্বর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী জানান, উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের ৫০ শতাংশ এবং অন্য সব ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ কোটা রাখার সুপারিশ করবেন তারা। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারের কাছে এই কমিশনের প্রতিবেদন দেওয়ার কথা রয়েছে।

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান জানান, সংস্কার প্রস্তাবে বলা হয়েছে- পরীক্ষা ছাড়া সিভিল সার্ভিসের উপসচিব ও যুগ্ম সচিব পর্যায়ে কেউ পদোন্নতি পাবেন না। পাবলিক সার্ভিস কমিশন পরীক্ষা নেবে। ৭০ নম্বর না পেলে পদোন্নতি পাবেন না।

পরীক্ষায় একজন কাস্টমস ক্যাডারের কর্মকর্তা সবচেয়ে বেশি নম্বর পেলে তিনি উপসচিবের তালিকায় ১ নম্বরে আসবেন। এর মাধ্যমে আন্ত ক্যাডার বৈষম্য দূর হবে।

যেকোনো ক্যাডারের যে কেউ ৭০ নম্বর পেলে প্রশাসন ক্যাডারে আসতে পারবেন। এ ছাড়া উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য ৫০ শতাংশ এবং অন্য ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ সুপারিশ করা হচ্ছে।

বর্তমানে উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডার থেকে ৭৫ শতাংশ এবং অন্য ক্যাডার থেকে ২৫ শতাংশ নেওয়া হয়।

বিষয়টি নিয়ে গত মঙ্গলবার রাতেই নিজেদের করণীয় ঠিক করতে জরুরি বৈঠক করেছে প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বিএএসএ)।

তাদের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডার থেকে ৭৫ শতাংশ এবং অন্য ক্যাডার থেকে ২৫ শতাংশ নেওয়া হয়। এটি পরিবর্তন করা দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায় উপেক্ষা করার শামিল। এতে প্রশাসনে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে।

অন্যদিকে প্রশাসন ছাড়া অন্যান্য ক্যাডার কর্মকর্তারা কমিশনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ।

তাদের মতে, উপসচিবের মতো যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রেও একই সুবিধা থাকতে হবে। এটি করা হলে প্রশাসনের দীর্ঘদিনের আন্ত ক্যাডার বৈষম্য দূর হবে। প্রশাসনে সব ক্যাডারে সমতা ফিরবে।  

কমিশনের সুপারিশের বিষয়গুলো সামনে আসার পরই এ ব্যাপারে প্রশাসন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়। একই দিন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিষয়ে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের জেলা শাখা সভাও করেছে।

প্রশাসন ক্যাডার উপসচিব থেকে সচিব পর্যন্ত সব পদে প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদায়ন চায়। অন্যদিকে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা তাদের ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত না রাখার সুপারিশের বিপক্ষে। মানে তারা ক্যাডারেই থাকতে চান।

এরই মধ্যে ২৫টি ক্যাডার নিয়ে গঠিত ‘আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’ গতকাল শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় একটি সভা করে। সভায় পরিষদের সঙ্গে পরিষদভুক্ত ২৫টি ক্যাডারের পৃথক সংগঠনের নেতাদের মতবিনিময় হয়। সভা থেকে প্রতিটি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তাদের দিয়ে পরিচালনা ও কোটামুক্ত উপসচিব পুলের দাবিতে কলমবিরতিসহ আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, আগামীকাল সোমবার প্রতিটি ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন এ বিষয়ে বিবৃতি দেবে। পরদিন মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১ ঘণ্টা সব অফিসে কলমবিরতি। ২৬ ডিসেম্বর বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সব অফিসের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন। আর যেসব বিভাগে বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়নি, দ্রুত সেখানে সমাবেশ আয়োজন ও জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো। এ ছাড়া আগামী ৪ জানুয়ারি ঢাকায় সমাবেশ আয়োজন করা হবে। সেখানেই পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।