জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে খেলা চলাকালে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৪৯ বছর। গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়ার মুত্যতে শোকের ছায়া নেমেছে দেশের ক্রীড়াঙ্গণে।
শুক্রবার ০৫ জুলাই সন্ধ্যায় জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের ১২তম রাউন্ডে এ ঘটনা ঘটে।
জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের ১২তম রাউন্ড চলছিল। বিকেল ৩টা থেকে শুরু হওয়া এই রাউন্ডের খেলায় আরেক গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীবের বিপক্ষে ভালো অবস্থানেই ছিলেন গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান।
তবে খেলার প্রায় ৩ ঘণ্টা পার হওয়ার সন্ধ্যা ৬টার দিকে হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যান তিনি। অসুস্থ হয়ে পড়েন গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়া। পরে হাসপাতালে নেয়ার পর দ্রুত চিকিৎসা শুরু করলেও বাঁচানো যায়নি তাকে।
খেলা চলাকালীন বিকেল ৫টা ৫২ মিনিটে তিনি লুটিয়ে পড়েন। এরপর সবাই তড়িঘড়ি করে মাত্র ৯ মিনিটের মধ্যে তাকে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকরাও দ্রুতই চিকিৎসা শুরু করেন এই গ্র্যান্ডমাস্টারের। প্রায় ১৫ মিনিট পর্যন্তও তার পালস খুঁজে পাননি ডাক্তাররা। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জিয়াউর রহমানকে মৃত ঘোষণা করেন।
জিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম। যদিও তার আত্মীয়-স্বজন, শুভাকাংখী সহ ক্রীড়াঙ্গনের অনেকেই বিষয়টি এখনও মেনে নিতে পারছেন না।
উল্লেখ্য, ৪৮তম জাতীয় দাবার একাদশ রাউন্ড শেষে ৮ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ আনসারের গ্র্যান্ড মাস্টার জিয়াউর রহমান এককভাবে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন। আজ যার সঙ্গে খেলছিলেন গতবারের চ্যাম্পিয়ন গ্র্যান্ড মাস্টার এনামুল হোসেন রাজীব সাড়ে সাত পয়েন্ট নিয়ে যৌথভাবে ছিলেন তৃতীয় স্থানে।
১৯৭৪ সালে জন্ম নেয়া জিয়া ১৯৯৩ সালে ইন্টারন্যাশনাল আর ২০০২ সালে দেশের দ্বিতীয় গ্র্যান্ডমাস্টারের খেতাব অর্জন করেন। বাংলাদেশি দাবাড়ুদের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৫ শো ৭০ ফিদে রেটিংও তার। ১৯৮৮ সালে প্রথমবার জাতীয় দাবায় চ্যাম্পিয়ন হন জিয়াউর রহমান। টুর্নামেন্টে রেকর্ড ১৪ বারের চ্যাম্পিয়নও তিনি। যেখানে বাকি চার গ্র্যান্ডমাস্টার সম্মিলিতভাবে জিতেছেন ১৬ বার।
মৃত্যুকালে জিয়ার বয়স হয়েছিল ৫০ বছর। তার ছেলে তাহসিন তাজওয়ারও এবারের জাতীয় দাবা লিগে খেলছেন। আজ শুক্রবার জিয়ার স্ত্রী লাবণ্যও ছিলেন ফেডারেশনে। স্ত্রী ও সন্তানের সামনেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন তিনি।