রাশিয়ার জন্মহার এমন ভাবে কমছে যে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন রুশ সরকার। আর সেই সমস্যা মোকাবিলার জন্যই অভিনব অভূতপূর্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাশান সরকার।
জন্মহার কমে যাওয়ায় সমস্যা সমাধানে দেশের নাগরিকদের কর্মক্ষেত্রে মধ্যাহ্নভোজ এবং কফি বিরতির ফাঁকে শারীরিক সম্পর্কের পরামর্শ দিয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকার!
সংবাদমাধ্যম মেট্রোর বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, রাশিয়ার জন্মহার এমনভাবে কমছে যে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন রুশ সরকার। আর সেই সমস্যা মোকাবিলার জন্যই দেশের জনসাধারণকে কাজের ফাঁকেই শারীরিক সম্পর্কের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে রাশিয়ায় একজন মহিলা পিছু শিশু জন্মহার ১.৫। গত কয়েকবছর ধরে রাশিয়ায় জন্মনিয়ন্ত্রণ করা শুরু হয়েছে। কিন্তু এবার সেটা বাড়াতে হবে। একজন মহিলা পিছু সেই হার ২.১ হওয়া দরকার— এমনটাই পরামর্শ দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অভিমত।
রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েভজেনি শেস্তোপলোভ সম্প্রতি সাংবাদিক বৈঠকে রাশিয়ার চাকরিজীবীদের বেশি বেশি করে শারীরিক সম্পর্ক করার এবং সন্তান জন্ম দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে তিনি তার অভিনব অভিমতও জানান।
শেস্তোপলোভের দাবি, সন্তানধারণ এড়িয়ে যাওয়ার জন্য কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত ব্যস্ততার অজুহাত দেওয়া যেতে পারে না। মানুষের উচিত কর্মক্ষেত্রে বিরতির সময় কাজে লাগিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করা। তার মতে, ‘রাশিয়ানদের কাজের বিরতির সময় যৌনমিলনে উৎসাহিত করতে হবে। দেশের জনসাধারণকে কাজের ফাঁকেই সঙ্গমের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
এমনটা শুনে তাজ্জব বনে গেলেও দেশবাসীকে সত্যিই সঙ্গম নিয়ে এমন বার্তা দিয়েছে রাশিয়ার সরকার। কিন্তু কেন তিনি এমন কথা বলেছেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে কৌতূহল।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ার জন্মহার এমন ভাবে কমছে যে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন রুশ সরকার। আর সেই সমস্যা মোকাবিলার জন্যই দেশের জনসাধারণকে কাজের ফাঁকেই সঙ্গমের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
জন্মহার ছাড়াও সরকারি রিপোর্ট বলছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে প্রায় ১০ লক্ষ রুশ তরুণ-তরুণী দেশ ছেড়েছেন। এই নিয়েও চিন্তা বেড়েছে পুতিন সরকারের।
কিন্তু কীভাবে ১২-১৩ ঘণ্টা ধরে কাজ করা এক জন কর্মী সন্তান নেওয়ার কথা চিন্তা করবেন? এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, জীবন খুব দ্রুত ফুরিয়ে যায়। কাজে ব্যস্ত থাকার অজুহাত খুব একটা যুক্তিগ্রাহ্য নয়। কাজের ফাঁকে শারীরিক সম্পর্কের জন্য সময় বের করাই যায়।
শেস্তোপলোভ আরও বলেন, সন্তানধারণ এড়িয়ে যাওয়ার জন্য কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত ব্যস্ততার অজুহাত দেওয়া যেতে পারে না। মানুষের উচিত কর্মক্ষেত্রে বিরতির সময় কাজে লাগিয়ে সঙ্গম করা।
জনসংখ্যা হ্রাসের উদ্বেগ কমাতে দেশের জনগণকে কর্মক্ষেত্রে শারীরিক সম্পর্কের পরামর্শ ছাড়াও বিনামূল্যে নারীদের প্রজননক্ষমতা পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দেশের নাগরিকদের উৎসাহিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে পুতিন সরকার। পাশাপাশি, সন্তানধারণে কর্মীদের অনুপ্রাণিত করার জন্য কর্তৃপক্ষও যেন ভূমিকা পালন করেন, তা নিশ্চিত করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এর আগে খোদ পুতিনও জন্মহার কমে যাওয়াকে জাতীয় স্তরে গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত বলে মন্তব্য করেছিলেন।