বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ৩ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে জয়ের জন্য আফগানিস্তানকে ২৪৫ রানের টার্গেট দিয়েছে বাংলাদেশ। আগের দুই ম্যাচে ১-১ সমতায় দুই দল।
সোমবার ১১ নভেম্বর শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন টাইগারদের অন্তর্বর্তী অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। এ ম্যাচে পেসার নাহিদ রানার অভিষেক হয়েছে।
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মেহেদি হাসান মিরাজের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে সিরিজের ৭২ রানে ৪ উইকেট পতনের পর পঞ্চম উইকেটে মাহমুদুল্লাহ ও অধিনায়ক মিরাজের ১৮৮ বলে ১৪৫ রানের জুটিতে ভর করে প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৪৪ রান সংগ্রহ করেছে টাইগাররা।
কুঁচকির ইনজুরির কারণে নিয়মিত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ছিটকে যাওয়ায় শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচে টস করতে নামেন মেহেদি হাসান মিরাজ। এই প্রথমবারের মত বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পান মিরাজ। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন দেশের ১৩তম ক্রিকেটার হিসেবে শততম ওয়ানডে খেলতে নামা মিরাজ।
ব্যাট হাতে নেমে বাংলাদেশকে ৫১ বলে ৫৩ রানের সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার তানজিদ হাসান ও সৌম্য সরকার। প্রথম দুই ম্যাচের মত ভালো শুরু করেও ৩টি চারে ব্যক্তিগত ২৪ রানে আফগানিস্তানের পেসার আজমতুল্লাহ ওমারজাইর বলে বোল্ড হন সৌম্য।
শূন্য ও ৮ রানে জীবন পেয়েও বড় স্কোরের দেখা পাননি তানজিদ। স্পিনার মোহাম্মদ নবীর শিকার হবার আগে ৩টি বাউন্ডারিতে ১৯ রানে আউট হন তানজিদ। শান্তর পরিবর্তে তিন নম্বরে ব্যাট হাতে নেমে ৪ রানে রান আউট হন জাকির হাসান। নয় থেকে দশ ওভারের মধ্যে ১২ বলে ৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
১৫তম ওভারে দলীয় ৭২ রানে চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে তাওহিদ হৃদয়ের বিদায়ে বাংলাদেশের উপর চাপ আরও বাড়ে। স্পিনার রশিদ খানের বলে স্লিপে গুলবাদিন নাইবকে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৭ রান করেন হৃদয়।
খাদের কিনারায় পড়ে যাওয়া বাংলাদেশকে টেনে তোলার দায়িত্ব বর্তায় মিরাজ ও মাহমুদুল্লাহর কাঁধে। উইকেটে সেট হতে সাবধানে খেলতে শুরু করেন দু’জনে। ২৪তম ওভারে দলের রান ১’শতে নেন তারা। ২৮তম ওভারে জুটিতে পঞ্চাশ পূর্ণ করেন মিরাজ ও মাহমুদুল্লাহ। ৩৫তম ওভারের শেষ বলে বাংলাদেশ ইনিংসে প্রথম ছক্কা মারেন মাহমুদুল্লাহ। ঐ ছক্কাতেই টাইগারদের রান দেড়শ স্পর্শ করে।
৪০তম ওভারের তৃতীয় বলে ২৩৫ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ২৯তম এবং আফগানিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান মাহমুদুল্লাহ। এজন্য ৬৩ বল খেলেছেন তিনি।
পরের ওভারে ওয়ানডেতে চতুর্থ ও আফগানদের বিপক্ষে তৃতীয় অর্ধশতক করেন মিরাজ। মাত্র ২টি চারে ১০৬ বল খেলে ও ৪৭.১৬ স্ট্রাইক রেটে বাংলাদেশের হয়ে মন্থরতম হাফ-সেঞ্চুরির রেকর্ডের তালিকায় ষষ্ঠস্থানে নাম তুলেছেন মিরাজ। বাংলাদেশের পঞ্চম অধিনায়ক হিসেবে ওয়ানডের অভিষেকে এবং দেশের তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে নিজের শততম ম্যাচে হাফ-সেঞ্চুরি পেলেন তিনি।
হাফ-সেঞ্চুরির পর ইনিংস বড় করার চেষ্টা করেছেন মিরাজ ও মাহমুদুল্লাহ। ৪৬তম ওভারে ওমারজাইর দ্বিতীয় শিকার হন মিরাজ। ৪টি বাউন্ডারিতে ১১৯ বলে ৬৬ রান করেন মিরাজ। পঞ্চম উইকেটে মাহমুদুল্লাহর সাথে ১৮৮ বলে ১৪৫ রান যোগ করেন মিরাজ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে পঞ্চম উইকেটে এটিই সর্বোচ্চ রানের জুটি। এমনকি শারজাহর মাঠে যেকোন উইকেটে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েছেন তারা।
মিরাজের পর উইকেটরক্ষক জাকের আলি ১ রানে আউট হলেও বাংলাদেশকে সামনের দিকে নিয়ে গেছেন মাহমুদুল্লাহ। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে ইনিংসের শেষ বলে ৯৮ রানে রান আউট হন তিনি। ইনিংসের শেষ বলে সেঞ্চুরির জন্য ৩ রানের প্রয়োজনে মাত্র ১ রান নিতে পারেন মাহমুদুল্লাহ। ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায় সাজানো মাহমুদুল্লাহর ৯৮ বলে ৯৮ রানের
উপর ভর করে ৮ উইকেটে ২৪৪ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।
ওমারজাই ৩৭ রানে ৪ ও নবী-রশিদ ১টি করে উইকেট নেন।