অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের প্রথম সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে গেল বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ ১৬৭ বল হাতে রেখেই ৭ উইকেটের বিশাল জয় পায় বাংলাদেশ
শুক্রবার ৬ ডিসেম্বর দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় দুই দল। টসে জিতে পাকিস্তান যুবাদের আগে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের পেসারদের সামনে টিকতেই পারেনি পাকিস্তান। ইকবাল হোসেন ইমন-মারুফ মৃধাদের পেস আগুনে পুড়ে ৩৭ ওভার খেলে পাকিস্তান অলআউট হয় মাত্র ১১৬ রানে।
শুরুর ওভার থেকেই তোপ দাগতে থাকেন বাঁহাতি পেসার মারুফ। প্রথম ওভারেই ৪র্থ ডেলিভারিতে উসমান খানকে ডাক বানিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরান। পরের ওভার করতে এসে তুলে নেন আরও এক পাক ওপেনারের উইকেট। তার আউটসুইংয়ে পরাস্ত হন আরেক ওপেনার শাহজাইব খান। পাকিস্তানের দুই ওপেনারের দুজনই আউট হয়েছেন শূন্য রানে।
তৃতীয় উইকেটে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন মুহাম্মদ রিয়াজুল্লাহ ও অধিনায়ক সাদ বেগ। দলকে ৪৯ রান পর্যন্ত নিয়ে যান এই দুজন। এরপর আবার ধস। ৭৯ রানের মধ্যে একে একে ফিরে যান সাদ (১৮), নাভিদ আহমেদ খান, রিয়াজুল্লাহ (২৮) ও হারুন আরশাদ। পরের চার উইকেটের মধ্যে দুইটি ইমন, একটি আল ফাহাদ ও রান আউট হন একজন।
সপ্তম উইকেটে ৩৪ রান যোগ করেন ফারহান ইউসুফ ও ফাহাম উল হক। শেষ ৪ উইকেট আবার মাত্র ৩ রানের মধ্যে হারায় পাকিস্তান। এর মধ্যে ২ উইকেট আবার ইমনের। শেষ পর্যন্ত এই পেসারের বোলিং ফিগার: ৭-১-২৪-৪। মারুফের ২ উইকেট ছাড়া আরেক পেসার আল ফাহাদ নেন এক উইকেট। বাকি উইকেটটি দেবাশিষ দেবার। পাকিস্তানের হয়ে ৩২ বলে সর্বোচ্চ ৩২ রান করেন ফারহান।
শেষ পর্যন্ত ৩৭ ওভারে ১১৬ রানে থামে পাকিস্তানের ইনিংস। ৭ ওভার বল করা ইকবাল হোসেন ইমন মাত্র ২৪ রান খরচায় নেন ৪ উইকেট। ২৩ রান দিয়ে দুই উইকেট পেয়েছেন মারুফ মৃধা।
জয়ের জন্য ১১৭ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ওপেনার কালাম সিদ্দিকি নামের পাশে কোনো রান লেখার আগেই বিদায় নেন। ১৪ বল খেলেও পাননি রানের দেখা। আরেক ওপেনার জাওয়াদ আবরারের ব্যাট থেকে আসে ১৭ রান। প্রথম দুই ওভারে চার রান নেওয়ার পর দুই ওভার মেডেন উপহার দেয় বাংলাদেশ। প্রথম ৬ ওভারে আসে মাত্র ২০ রান। সপ্তম ওভারের প্রথম বলে ফেরেন ওপেনার কালাম সিদ্দিকি (১৪ বলে ০)।
তবে তিন নম্বরে তামিম ব্যাটিংয়ে নামার পরই ঘুরে যায় রানের চাকা। ২৮ রানে বাংলাদেশ আরেক ওপেনার জাওয়াদ আবরারকে (২৫ বলে ১৭) হারালেও সে চাকা আর থামানো যায়নি। শিহাব জেমসের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে গড়েন ৫৭ রানের জুটি। ৮৫ রানের মাথায় জেমস ফিরলেও (২৬) চার-ছক্কা হাঁকিয়ে বাংলাদেশকে জয়ের পথে নিতে থাকেন তামিম। ৩৯ বলে নিজের ফিফটি পূর্ণ করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
শেষ পর্যন্ত আর কোনো উইকেট না হারিয়েই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। আরেক পাশে ৫ রানে অপরাজিত ছিলেন রিজান হোসেন।
৮ ডিসেম্বর দুবাইয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত।
আজকেই টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে ৭ উইকেটে হারিয়ে প্রথম দল হিসেবে ফাইনালের টিকিট পায় ভারত। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন জুনিয়র টাইগাররা আরও এক শিরোপা জয়ের খুব কাছে।
পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯: ৩৭ ওভারে ১১৬ (উসমান ০, শাহজাইব ০, রিয়াজউল্লাহ ২৮, সাদ ১৮, নাভিদ ২, হারুন ১০, ফারহান ৩২, ফাহাম ৮*, উমার ১, সুবহান ০, রাজা ০; মারুফ ৬-০-২৩-২, ফাহাদ ৮-০-২৩-১, রিয়াজ ৮-২-১৩-০, ইমন ৭-১-২৪-৪, সামিউন ৫-০-১৫-০, আজিজুল ১-০-১১-০, দেবাশিস ২-১-৭-১)।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯: ২২.১ ওভারে ১২০/৩ (জাওয়াদ ১৭, কালাম ০, আজিজুল ৬১*, শিহাব ২৬, রিজান ৫*; রাজা ৯-৩-৪০-১, উমার ৫-১-৩৬-০, সুবহান ৫-০-২৭-১, নাভিদ ৩.১-০-১৩-১)।
ম্যান ব দা ম্যাচ: ইকবাল হোসেন ইমন।