National Online News Portal of Bangladesh - বাংলাদেশের জাতীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল - بوابة الأخبار الوطنية على الإنترنت لبنغلاديش - बांग्लादेश का राष्ट्रीय ऑनलाइन समाचार पोर्टल - بنگلہ دیش کا قومی آن لائن نیوز پورٹل
ছবি: সংগৃহিত

বেগুনি রঙ কেন বিশ্ব নারী দিবসের প্রতীক

  ।। তাইয়্যেবা মারজান।।  শুক্রবার | মার্চ ৮, ২০২৪ | ০৮:০৯ পিএম

আজ ৮ মার্চ। আন্তর্জাতিক নারী দিবস।

প্রতি বছর এই দিনে নারী দিবস পালন করা হয়। আবার নারী দিবস এলেই দেখা যায় বেগুনি রঙের ছড়াছড়ি। কর্মক্ষেত্র থেকে শুরু করে সকল জায়গায় নারীদের গায়ে বেগুনি রঙের পোশাক। কেউ পরে বের হচ্ছেন বেগুনি রঙের শাড়ি আবার কেউ পছন্দ করে নিচ্ছে বেগুনি রঙের থ্রি-পিস। সবশেষে যেন নারীদের গায়ে আজ বেগুনি রঙ ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। কেউ দিয়েছেন বেগুনি লিপস্টিক, কেউ পড়েছেন বেগুনি ব্যান্ড আর্মস।

নারী দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজেও সেই বেগুনির বাহার। ফুল, মঞ্চের পিছনের ডিজাইন, বেলুন থেকে সকল সাজ সজ্জ্বায় বেগুনির আধিক্য।

কেন নারী দিবসের রঙের প্রতীক বেগুনি? অনেকের কাছেই এই তথ্য অজানা। তাহলে চলুন জেনে নেই এর কারণ।

ইতিহাস থেকে জানা যায় ১৯৭৫ সালে নারী দিবস উদযাপন শুরু করে জাতিসংঘ। ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ৮ মার্চ দিনটিকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। সেই তখন থেকে দিনটি বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হয়ে আসছে। বছরের এই দিন পালন করা হয় গুরুত্বের সঙ্গে। মূলত লিঙ্গবৈষম্য দূর করার উদ্দ্যেশেই দিনটি উদযাপন করা হয়।

নারী দিবসের প্রতীক হলো বেগুনি রং। শুধূ বেগুনি বললে ভুল বলা হবে। যদিও এই দিবসকে কেন্দ্র করে উৎসর্গ করা হয়েছে বেগুনি রঙকে। তবে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, বেগুনি, সবুজ এবং সাদা এই তিনটি রংই হলো আন্তর্জাতিক নারী দিবসের রঙ।

কারণ বেগুনি রং দিয়ে ন্যায়বিচার এবং মর্যাদাকে বোঝায়, সবুজ হচ্ছে আশার প্রতীক আর সাদা বিশুদ্ধতার রং। ১৯০৮ সালে যুক্তরাজ্যের উইমেন‍`স সোশ্যাল অ্যান্ড পলিটিক্যাল ইউনিয়ন (ডব্লিউএসপিইউ) এই রঙগুলোকেই নির্দিষ্ট করে দেয়।

নারী দিবস উদযাপনে নারীরা এই তিনটি রঙকেই বেছে নিতে পারেন। এই দিনটিতে বেগুনি, সবুজ কিংবা সাদা রঙের পোশাক পরে উদযাপন করতে পারেন। তবে বিশ্বজুড়ে বেশি প্রাধান্য পায় বেগুনি রঙটি। তাই বেগুনি রঙের পোশাক পরলেই এই দিনটির তাৎপর্যের সঙ্গে মিশে যাবেন আপনিও।

যেমন লাল রং হলো বিশ্ব শ্রম দিবস, সবুজাভ নীল রং হলো বিশ্ব শান্তি দিবস এবং সবুজ রঙ হলো বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রতীক। নিজস্ব রং থাকে সব দিবসেরই। সেসব রঙের পেছনে লুকিয়ে থাকে কোনো না কোনো ইতিহাস। বেগুনি রংকে মনে করা হয় সুবিচার ও মর্যাদার প্রতীক। এটি নারীর জন্য একটি প্রতিবাদের রংও বলা যায়।

বেগুনি রংকে নারীর ন্যায়বিচার ও সম্মানের প্রতীক মনে করা হতো। বিংশ শতকের শুরুতে যখন ব্রিটেনের নারীরা ভোটাধিকার আদায়ে রাজপথে নেমেছিলেন তারা বেগুনি রংকে প্রাধান্য দিয়েছিলেন। এই রংকে আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে প্রাধান্য পেয়েছিল সাদা ও সবুজ। নারীরা তাদের অধিকারের হিসেবে বেগুনির আভিজাত্য, সবুজের আশা এবং সাদা শুদ্ধতাকে প্রাধান্য দিয়েছিল। নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যারা কাজ করেন তারা এই রংকে সমানাধিকারের প্রতীক হিসেবেও দেখেন।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেগুনি রংকে প্রাধান্য দিয়ে নারী দিবস পালন করা হচ্ছে। ২০১৮ সাল থেকে নারী দিবসের থিম কালার হিসেবে স্থান করে নিয়েছে বেগুনি। সে বছর আন্তার্জাতিক প্রতিষ্ঠান প্যান্টন বেগুনি রঙকে নারী দিবসের রং হিসেবে ঘোষণা দেয়। এ বেগুনি দিয়ে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিকে বোঝানো হয়। আর নারীরা হবে ঠিক অতিবেগুনি রশ্মির মতো শক্তিশালী।

বিভিন্ন পণ্যে ব্যবহৃত রঙ নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান প্যানটোন। রঙের মিশ্রণ করা এবং রং মেলানোর এই প্রতিষ্ঠানটি ২০১৮ সালে প্যানটোন বেগুনিকে বর্ষসেরা রঙের খেতাব দেয়। ওই বেগুনি হচ্ছে অতিবেগুনি রশ্মি।

প্যানটোন ব্যাখ্যা করে, বেগুনি রংটি তৈরি হয় নীল ও লালের মিশ্রণে। ফলে এই রঙের ব্যাপকতাও বেশি। বেগুনি মানে হচ্ছে মহাকাশের মতো অসীম। এই রং দিয়ে বোঝানো হয় সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিকেও। এটি যেন মনে করিয়ে দেয়, নারীর শক্তি সূর্যের রশ্নির মতোই। এই রঙ থেকে নতুন কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

প্যানটোনের এই ব্যাখ্যা নারী দিবস পালনের উদ্দেশ্যের সঙ্গে মিলিয়ে দিতে রংটিকে লুফে নেয় নারী দিবস উদ্যাপন কর্তৃপক্ষ। নারী অধিকারকর্মীরা বিশ্বাস করেন, নারী যদি তার স্বাতন্ত্র্য দিয়ে সামনে এগিয়ে আসতে পারে, তবে পৃথিবীও পাবে নতুন কিছু।

তথ্যসূত্র: অন্তর্জাল