স্পীকার পদত্যাগ করলেও নির্বাচিত উত্তরাধিকারী না আসা পর্যন্ত
পদে বহাল আছেন ও থাকবেন সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর মত
-ম,ম,বাসেত
।। মো:মাহবুবুল বাসেত ।।
জাতীয় সংসদের স্পীকার শিরীন শারমিন চৌধূরী পদত্যাগ করেছেন এবং তার পদত্যাগের বিষয়ে বিজ্জপ্তিও প্রচারিত হয়েছে।তিনি পদত্যাগ করলেও নির্বাচিত উত্তরাধিকারী না আসা পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকবেন ও আছেন-এটাই সাংবিধানিক বিধান এবং পৃুথিবীর প্রায় সকল দেশেই একই বিধান রয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীর মত।
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পীকারের পদত্যাগের বিষয়টির সাথে *সংবিধান,*জাতীয় সংসদের কার্যপ্রনালী বিধি এবং *জাতীয় সংসদ সচিবালয় আইন যুক্ত রয়েছে।
সংবিধান :
১ম পরিচ্ছেদ
সংসদ
স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকার
৭৪। (১) কোন সাধারণ নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম বৈঠকে সংসদ-সদস্যদের মধ্য হইতে সংসদ একজন স্পীকার ও একজন ডেপুটি স্পীকার নির্বাচিত করিবেন, এবং এই দুই পদের যে কোনটি শূন্য হইলে সাত দিনের মধ্যে কিংবা ঐ সময়ে সংসদ বৈঠকরত না থাকিলে পরবর্তী প্রথম বৈঠকে তাহা পূর্ণ করিবার জন্য সংসদ-সদস্যদের মধ্য হইতে একজনকে নির্বাচিত করিবেন।
(ব্যাখ্যা-সংসদ নেই-ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে-অতএব,নির্বাচনের মাধ্যমে পরবতী সংসদ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত সংসদের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে না এবং সে পর্যন্ত নতুন স্পীকার বা ডেপটি স্পীকার নির্বাচিতও হতে পারবেন না বিধায় নির্বাচিত উত্তরাধিকারী না ্আসা পর্যন্ত নিজ পদে বহাল থাকবেন স্পীকার)
(২) স্পীকার বা ডেপুটি স্পীকারের পদ শূন্য হইবে, যদি-
(ক) তিনি সংসদ-সদস্য না থাকেন;
(খ) তিনি মন্ত্রী-পদ গ্রহণ করেন;
(গ) পদ হইতে তাঁহার অপসারণ দাবী করিয়া মোট সংসদ-সদস্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সমর্থিত কোন প্রস্তাব (প্রস্তাবটি উত্থাপনের অভিপ্রায় জ্ঞাপন করিয়া অন্যূন চৌদ্দ দিনের নোটিশ প্রদানের পর) সংসদে গৃহীত হয়;
***(ঘ) তিনি রাষ্ট্রপতির নিকট স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে তাঁহার পদ ত্যাগ করেন;
( করেছেন এবং গেজেটে তা প্রচারিতও হয়েছে)
(ঙ) কোন সাধারণ নির্বাচনের পর অন্য কোন সদস্য তাঁহার কার্যভার গ্রহণ করেন; অথবা
(চ) ডেপুটি স্পীকারের ক্ষেত্রে, তিনি স্পীকারের পদে যোগদান করেন।
**
*(৩) স্পীকারের পদ শূন্য হইলে বা তিনি 1[রাষ্ট্রপতিরূপে কার্য করিলে] কিংবা অন্য কোন কারণে তিনি স্বীয় দায়িত্বপালনে অসমর্থ বলিয়া সংসদ নির্ধারণ করিলে স্পীকারের সকল দায়িত্ব ডেপুটি স্পীকার পালন করিবেন, কিংবা ডেপুটি স্পীকারের পদও শূন্য হইলে সংসদের কার্যপ্রণালী-বিধি-অনুযায়ী **কোন সংসদ-সদস্য **তাহা পালন করিবেন; এবং সংসদের কোন বৈঠকে স্পীকারের অনুপস্থিতিতে ডেপুটি স্পীকার কিংবা ডেপুটি স্পীকারও অনুপস্থিত থাকিলে সংসদের কার্যপ্রণালী-বিধি-অনুযায়ী কোন সংসদ-সদস্য স্পীকারের দায়িত্ব পালন করিবেন।
( স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকার-দুই জনের একজনও না থাকলে কোন সমস্যা আছে? কোন সমস্যা হবে?)
(৪) সংসদের কোন বৈঠকে স্পীকারকে তাঁহার পদ হইতে অপসারণের জন্য কোন প্রস্তাব বিবেচনাকালে স্পীকার (কিংবা ডেপুটি স্পীকারকে তাঁহার পদ হইতে অপসারণের জন্য কোন প্রস্তাব বিবেচনাকালে ডেপুটি স্পীকার) উপস্থিত থাকিলেও সভাপতিত্ব করিবেন না এবং এই অনুচ্ছেদের (৩) দফায় বর্ণিত ক্ষেত্রমত স্পীকার বা ডেপুটি স্পীকারের অনুপস্থিতিকালীন বৈঠক সম্পর্কে প্রযোজ্য বিধানাবলী অনুরূপ প্রত্যেক বৈঠকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে।
(৫) স্পীকার বা ডেপুটি স্পীকারের অপসারণের জন্য কোন প্রস্তাব সংসদে বিবেচিত হইবার কালে ক্ষেত্রমত স্পীকার বা ডেপুটি স্পীকারের কথা বলিবার ও সংসদের কার্যধারায় অন্যভাবে অংশগ্রহণের অধিকার থাকিবে এবং তিনি কেবল সদস্যরূপে ভোটদানের অধিকারী হইবেন।
***(৬) এই অনুচ্ছেদের (২) দফার বিধানাবলী সত্ত্বেও ক্ষেত্রমত স্পীকার বা ডেপুটি স্পীকার তাঁহার উত্তরাধিকারী কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল রহিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে***।
(পানির মত স্বচ্ছ-দিন ও রাতের মত সুস্পস্ট-নির্াচিত উত্তরাধিকারী না আসা পর্যন্ত স্পীকার বহাল থাকবেন। এটাতো দেশের সব্বোচ্চ আইন। )
*জাতীয় সংসদ সচিবালয় আইন-১৯৯৪:
(১)সংসদ সচিবালয়ের কর্তৃত্ব:
***৫৷ (১) সংসদ সচিবালয়ের প্রশাসনিক দায়িত্ব স্পীকারের উপর ন্যস্ত থাকিবে৷
(২) স্পীকার তাহার এই দায়িত্ব স্বয়ং পালন করিবেন অথবা বিধি দ্বারা নির্ধারিত কোন কর্মকর্তার উপর অর্পণ করিবেন৷
( সংসদ সচিবালয় আইন-৯৪ অনুযায়ী স্পীকার প্রধান নির্বাহী-সংসদ ভেঙ্গে দিলেও সচিবালয়ের বহু কাজ আছে-স্টাফইতো আছে প্রায় একহাজার বা তারও বেশী-সর্ব শেষ অবস্হা আমার জানা নেই-একদম পানির মত স্বচ্ছ-যাবেন কোথায় তিনি?কেমনে যাবেন?পালনোরওতো সুযোগ নেই।)
*জাতীয় সংসদের কার্যপ্রনারী বিধি:
বিধি-১১:
স্পীকার ও ডেপুটি ন্পীকারের শুন্যপদ পুরন:
”স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকারের পদ শু্ন্য হইলে তাহা পুরনের জন্যে সংসদ অধিবেশনরত থাকিলে সাতদিনের মধ্রে কিংবা অধিরেবশনরত না থাকিলে পরবর্তি প্রথম বৈঠকে ক্ষেত্রমত ৮ বা ৯ বিধি মোতাবেক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে”।
( একদম পরিস্কার্। ৮ ও ৯ বিধি হচ্ছে স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকার নির্বাচন কিভাবে হবে তার পদ্ধতি সংত্রুান্ত। সংসদতো এখন অধিবেশনরত নেই-ভেঙ্গে দেযা হয়েছে। অতএব,প্রথম বৈঠক অনুস্ঠানের প্রশ্নই আসেনা এখন-প্রশ্ন আসবে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংসদ গঠিত হওয়ার পর।তখন প্রথম বৈঠকেই স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকারের শুন্য পদ পুরন করার জন্যে বিধি ৮ ও ৯ অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সে সময় পর্যন্ত স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকার স্বীয় পদে বহাল থাকবেন। দিন ও রাতের মত সুস্পস্ট বিধান)।
স্পীকারকে না পাওয়ায় জানা যাচ্ছেনা আসও তিনি কি কারনে পদত্যাগ করেছেন্।ৈ তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা এই পদত্যাগের কোন কারন হতে পারেনা। স্পীকার স্বেচ্চায় পদত্যাগ করলে অবশ্যই সংসদ নেতা/প্রধানমন্ত্রী/তার দলের নেত্রী শেখ হাসিনার সাখে কথা বলেই করবেন-শেখ হাসিনার সাথে তার সংযোগ না থাকার কথা নয়।
লেখক পরিচিতি:
*লেখক সিনিয়র সাংবাদিক এবং সংবিধান ও সংসদ বিশেষজ্ঞ হিসাবে পরিচিত
*https://bangalirkhobor.com/home/bkteam