National Online News Portal of Bangladesh - বাংলাদেশের জাতীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল - بوابة الأخبار الوطنية على الإنترنت لبنغلاديش - बांग्लादेश का राष्ट्रीय ऑनलाइन समाचार पोर्टल - بنگلہ دیش کا قومی آن لائن نیوز پورٹل
ছবি: গুগল

টাইটানিকের চেয়ে পাঁচগুণ বড় - আইকন অব সী’জ এর যাত্রা শুরু

  ।।বিকে আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।  রবিবার | জানুয়ারি ২৮, ২০২৪ | ০৬:৩৪ পিএম

টাইটানিকের চেয়ে পাঁচ গুন বড় বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রমোদতরী ‘আইকন অব দ্য সিজ’ যাত্রা শুরু করেছে শনিবার ২৭ শে জানুয়ারি। সূর্যাস্তের আগে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা রাজ্যের মায়ামি বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে জাহাজটি। গন্তব্য পূর্ব ও পশ্চিম ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ।

প্রমোদতরীটি সাত দিনের সমুদ্রযাত্রার পর গন্তব্যে পৌঁছবে। খবর সিবিএস নিউজের।

ছবি: সংগৃহিত

টাইটানিকের চেয়েও পাঁচ গুণ বড় এই প্রমোদতরী যেন সাগরের অন্তহীন নীলের মাঝে আস্ত এক মায়া নগরী। এতে আছে বিনোদনের এক অনন্য জগত। আইকন অফ দ্য় সিজ-এর দৈর্ঘ্য ৩৬৫ মিটার (১,১৯৭ ফুট)। মোট ওজন ২৫০,৮০০ টন। এই ক্রুজ জাহাজে ২০টি ডেক রয়েছে, রয়েছে ৭টি সুইমিং পুল, ৬টি ওয়াটার স্লাইড।

এছাড়াও জাহাজটির সবচেয়ে উপরের ডেকে আছে ৪০ টির বেশি বার, রেস্তোঁরা, লাউঞ্জ এবং বিনোদনস্থল। বিশাল এই তরীতে থাকতে পারবেন ৭ হাজার ৬০০ জন যাত্রী। ২,৩৫০ জন ক্রুর আলাদাভাবে থাকার বন্দোবস্ত রয়েছে।

ছবি: সংগৃহিত

রয়্যাল ক্যারিবিয়ান গ্রুপের মালিকানাধীন এই প্রমোদতরীর সামনের দিকে আছে 'অ্যাকোয়াডোম'। সেখানে দেখা যাবে জলপ্রপাত। আরও আছে পাঁচ ডেক উঁচু ও খোলা সেন্ট্রাল পার্ক। তাতে আছে এক সাঁতার ভাস্কর্য এবং প্রচুর গাছপালা।

'থ্রিল আইল্যান্ড'-নামে বিশালাকার ওয়াটার পার্কও আছে এ প্রমোদতরীতে। 'সার্ফসাইড' নামে একটি পারিবারিক এলাকা আছে। সরাসরি সমুদ্রের দৃশ্য দেখার জন্য আছে 'রয়্যাল প্রমেনেড'। 'দ্য হাইডওয়ে'তে ইনফিনিটি পুলও রয়েছে। এমনকি এতে রয়েছে থিম পার্ক, কৃত্রিম বিচ। পানাহার ও আমোদপ্রমোদের সব ব্যবস্থা তো থাকছেই।

ছবি: সংগৃহিত

বিশাল এই জাহাজে রয়েছে ২৮ ধরনের কেবিন। এদের মধ্যে ৮২ শতাংশ ঘরে ৩ থেকে ৪ জন মানুষ থাকতে পারবেন। এছাড়া ব্যালকনি রয়েছে ৭০ শতাংশ কেবিনে। অনেকে আবার পরিবার নিয়ে এই ইতিহাসের সাক্ষী হতে চাইবেন। তাদের কথা মাথায় রেখে আলাদা সুযোগ-সুবিধা রেখেছে রয়্যাল ক্যারিবিয়ান গ্রুপ।

২০২২ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে দ্য আইকন অফ দ্য সিজ-এর টিকিট বুকিং। তখন মাথাপিছু টিকিটের দাম ছিল ১ হাজার ২৫৯ ডলার। এক বছরের ব্যবধানে সেই খরচ বেশ খানিকটা বেড়েছে। প্রথম যাত্রায় জনপ্রতি খরচের রেঞ্জ হচ্ছে প্রায় ১ হাজার ৮০০ ডলার থেকে ২ হাজার ২০০ ডলারের কাছাকাছি।

ছবি: সংগৃহিত

জাহাজটি বানাতে খরচ হয়েছে ২০০ কোটি ডলার। ২০২২ সালের এপ্রিলে ফিনল্যান্ডের মেয়ার তুর্কু শিপইয়ার্ডে এই প্রমোদতরী তৈরির কাজ শুরু হয়। সেখান থেকেই এর ট্রায়াল রান হয়েছে। সেই পরীক্ষায় কয়েকশ’ মাইল পথ ভ্রমণ করেছে আইকন অব দ্য সিজ।

এতদিন বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রমোদতরী ছিল রয়্যাল ক্যারিবিয়ানের 'ওয়ান্ডার অফ দ্য সিজ'। সেটিকে পেছনে ফেলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রমোদতরী হল আইকন অব দ্য সিজ। ওয়ান্ডার অব দ্য সিজ ছিল ১ হাজার ১৮৮ ফুট দীর্ঘ, আর ওজন ছিল ২ লাখ ৩৫ হাজার ৬০০ টন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইকন অব দ্য সিজ লম্বায় প্রায় ১২০০ ফুট, যা বিশ্বখ্যাত জাহাজ টাইটানিকের চেয়ে পাঁচগুণ বড়। এর ওজন ২ লাখ ৫০ হাজার ৮০০ টন।

ছবি: সংগৃহিত

জাহাজটি নির্মাণ করেছে রয়্যাল ক্যারিবিয়ান গ্রুপ।

আইকন অব দ্য সিজযে পথে চলবে: মায়ামি থেকে পশ্চিম ক্যারিবিয়ান পর্যন্ত চলবে এই প্রমোদতরী। ক্যারিবিয়ান সাগরের পূর্ব ও পশ্চিম পথ ধরে এক সপ্তাহের সফরে থাকবে এটি। এই সাত রাতের মধ্যে এক রাতে বাহামায় রয়্যাল ক্যারিবিয়ান সংস্থার একটি দ্বীপে অতিথিদের নিয়ে যাওয়া হবে।

ছবি: সংগৃহিত

আইকন অব দ্য সিজ নিয়ে মিথেন শঙ্কার কথা বলছেন পরিবেশবাদীরা। পরিবেশবাদীরা সতর্ক করে বলেছেন, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) চালিত এই জাহাজ বাতাসে ক্ষতিকারক মিথেন গ্যাস নির্গমন করবে। ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অন ক্লিন ট্রান্সপোর্টেশনের (আইসিসিটি) মেরিন বিভাগের পরিচালক ব্রায়ান কমার বলেছেন, এটি ভুল পথে একটি পদক্ষেপ। আমাদের অনুমান হলো সামুদ্রিক জ্বালানি হিসেবে এলএনজি ব্যবহার করলে প্রচলিত তেলের তুলনায় ১২০ শতাংশ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হয়।

আর মেরিন ফুয়েলের তুলনায় এলএনজি অনেক পরিশুদ্ধভাবে পুড়লেও মিথেন নিঃসরনের বড় ধরনের ঝুঁকি আছে। আর শক্তিশালী এই গ্রিনহাউজ গ্যাস মিথেন বায়ুমন্ডলে ২০ বছর ধরে কার্বনডাই অক্সাইডের চেয়ে ৮০ গুন বেশি তাপ ধরে রাখতে পারে। বিশ্ব উষ্ণায়ন কমাতে মিথেন গ্যাস নিঃসরণ কমানোকে বর্তমান সময়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসাবেই দেখা হচ্ছে।