'বুদ্ধ পূর্ণিমা' বা 'বৈশাখী পূর্ণিমা' হল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পবিত্রতম উৎসব।
এই পুণ্য উৎসব বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে উদযাপিত হয়। বৈশাখী পূর্ণিমা দিনটি বুদ্ধদেবের তিন স্মৃতি বিজড়িত একটি দিন হিসেবে মানা হয়। সেই তিন স্মৃতি হল - ৬২৩ খৃষ্টপূর্বাব্দে এই পবিত্র তিথিতে বুদ্ধদেব জন্মগ্রহণ করেছিলেন, ৫৮৮ খৃষ্টপূর্বাব্দে বোধি বা সিদ্ধিলাভ করেছিলেন এবং সর্বোপরি ৫৪৩ খৃষ্টপূর্বাব্দে মহাপরিনির্বাণ বা মোক্ষ লাভ করেছিলেন।
আমরা তাঁর জন্ম ইতিহাস আলোচনা করলে পাবো ৬২৩ খৃষ্টপূর্বাব্দে লুম্বিনী নগরের কপিলাবস্তু শহরের রাজা শুদ্ধোদন ও রাণী মায়াদেবী এর কোল আলো করে এক কাননের শালবৃক্ষ ছায়ায় উন্মুক্ত আকাশতলে জন্ম হয়েছিল তাঁর। তাঁর নিকট জাতি, শ্রেণি ও গোত্রের কোনো ভেদাভেদ ছিল না।
সিদ্ধার্থের পিতা ছিলেন শাক্য বংশীয় রাজা শুদ্ধোদন। মাতা মায়াদেবী। মায়াদেবী কপিলাবস্তু থেকে পিতার রাজ্যে যাবার পথে লুম্বিনি গ্রামে (অধুনা নেপালের অন্তর্গত) সিদ্ধার্থের জন্ম দেন। তাঁর জন্মের সপ্তম দিনে মায়াদেবীর জীবনাবসান হয়। পরে তিনি বিমাতা গৌতমী কতৃক লালিত হন। ধারণা করা হয় তাঁর নামের “গৌতম” অংশটি বিমাতার নাম থেকেই এসেছে।
আবার কারও কারও মতে এটি তাঁর পারিবারিক নাম। জন্মের পঞ্চম দিনে রাজা আট জন জ্ঞানী ব্যক্তিকে সদ্যোজাত শিশুর নামকরণ ও ভবিষ্যৎ বলার জন্য ডাকেন। তাঁর নাম দেওয়া হয় 'সিদ্ধার্থ' - অর্থাৎ “যে সিদ্ধিলাভ করেছে, বা যার উদ্দেশ্য সফল হয়েছে”। তাঁদের মধ্যে একজন বলেন, রাজকুমার একদিন সত্যের সন্ধানে বেরিয়ে যাবেন এবং বোধিপ্রাপ্ত হবেন। একজন রাজপুত্র হিসেবে সিদ্ধার্থ বিভিন্ন শাখায় শিক্ষা লাভ করেন।
সিদ্ধার্থ গৌতমের বিবাহ সম্বন্ধে দুধরনের মত আছে। প্রথম মত অনুসারে ১৬ বছর বয়সে তিনি একটি প্রতিযোগিতায় তাঁর স্ত্রীকে লাভ করেন। অতঃপর পুত্র রাহুল জন্মগ্রহণ করে। আর একটি মত অনুসারে ২৮ বছর বয়সে তাঁকে সংসারের প্রতি মনোযোগী করার জন্য তাঁর পিতামাতা তাঁকে রাজকন্যা যশোধরার সাথে বিবাহ দেন। পরবর্তী বছরে জন্ম নেয় পুত্র রাহুল।
কথিত আছে, একদিন রাজকুমার সিদ্ধার্থ বেড়াতে বের হলে ৪ জন ব্যক্তির সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। প্রথমে তিনি একজন বৃদ্ধ মানুষ, অতঃপর একজন অসুস্থ মানুষ এবং শেষে একজন মৃত মানুষকে দেখতে পান। তিনি তাঁর সহিস চন্নকে এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলে, চন্ন তাঁকে বুঝিয়ে বলেন যে এটিই সকল মানুষের নিয়তি।
আবার একদিন (কারও কারও মতে সেদিনই) তিনি চন্নকে নিয়ে বের হলেন। এবারে তিনি দেখা পেলেন একজন সাধুর, যিনি মুণ্ডিতমস্তক এবং পীতবর্ণের জীর্ণ বাস পরিহিত। চন্নকে এঁর সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলে, তিনি বলেন উনি একজন সন্ন্যাসী, যিনি নিজ জীবন ত্যাগ করেছেন মানুষের দুঃখের জন্য। রাজকুমার সিদ্ধার্থ সেই রাত্রেই ঘুমন্ত স্ত্রী, পুত্র, পরিবারকে নিঃশব্দ বিদায় জানিয়ে তিনি প্রাসাদ ত্যাগ করেন। সাথে নিলেন চন্নকে। প্রাসাদ থেকে বেরিয়ে বনের শেষ প্রান্তে পৌঁছিয়ে তিনি থামলেন। তলোয়ার দিয়ে কেটে ফেললেন তার লম্বা চুল।
অতঃপর চন্নকে বিদায় জানিয়ে যাত্রা শুরু করলেন জ্ঞানান্বেষণে, মাত্র ২৯ বছর বয়সে। সিদ্ধার্থের এই যাত্রাকেই বলা হয় 'মহানিষ্ক্রমণ'।
দুঃখ ও দুঃখের কারণ সম্বন্ধে জানতে সিদ্ধার্থ যাত্রা অব্যাহত রাখেন। প্রথমে তিনি আলারা নামক একজন সন্ন্যাসীর কাছে যান। তাঁর উত্তরে সন্তুষ্ট হতে না পেরে তিনি যান উদ্দক নামক আর একজনের কাছে। কিন্তু এখানেও কোনও ফল পেলেন না। এভাবে কিছু দিন যাবার পর তিনি মগধের উরুবিল্ব নামক স্থানে গমন করেন। সেখানে প্রথমে একটি উত্তর-পূর্বমুখি শিলাখণ্ডের উপর বোধিসত্ত্ব জানু পেতে বসে আপন মনেই বলেছিলেন যে, “যদি আমাকে বুদ্ধত্বলাভ করতে হয় তা হলে বুদ্ধের একটি প্রতিচ্ছায়া আমার সম্মুখে দৃশ্যমান হোক।” এই কথা উচ্চারিত হবার সঙ্গে সঙ্গে শিলাখণ্ডের গায়ে তিন ফিট উঁচু একটি বুদ্ধের প্রতিচ্ছায়া প্রতিফলিত হল।
বোধিসত্ত্ব তপস্যায় বসার পূর্বে দৈববাণী হয় যে, “বুদ্ধত্ব লাভ করতে গেলে এখানে বসলে চলবে না; এখান থেকে অর্ধযোজন দূরে পত্রবৃক্ষতলে তপস্যায় বসতে হবে।” এরপর দেবগণ বোধিসত্ত্বকে সঙ্গে করে এগিয়ে নিয়ে যান। মধ্যপথে একজন দেবতা ভূমি থেকে একগাছা কুশ ছিঁড়ে নিয়ে বোধিসত্ত্বকে দিয়ে বলেন যে, এই কুশই সফলতার নিদর্শন স্বরূপ। বোধিসত্ত্ব কুশগ্রহণের পর প্রায় পাঁচ শত হাত অগ্রসর হন এবং পত্রবৃক্ষতলে ভূমিতে কুশগাছটি রেখে পূর্বমুখি হয়ে তপস্যায় বসেন। কঠোর সাধনার ফলে তাঁর শরীর ক্ষয়ে যায়। কিন্তু এ তপস্যায় তিনি ভয়, লোভ ও লালসাকে অতিক্রম করে নিজের মনের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ লাভ করতে সক্ষম হলেন।
সহসা তিনি বুঝতে পারলেন এভাবে বোধিলাভ হবে না। তিনি তাই আবার খাদ্য গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলেন। সুজাতা নাম্নী এক নারীর কাছ থেকে তিনি এক পাত্র পরমান্ন আহার করলেন। অতঃপর তিনি নদীতে স্নান করে পুনরায় ধ্যানরত হন। অবশেষে কঠোর তপস্যার পর তিনি বুদ্ধত্বপ্রাপ্ত হলেন।
শাক্যমুনি বোধিলাভের পর সাতদিন ধরে বোধিবৃক্ষের দিকে তাকিয়ে থেকে বিমুক্তিলাভের আনন্দ উপভোগ করেন। তিনি দুঃখ, দুঃখের কারণ, প্রতিকার প্রভৃতি সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করলেন। এ ঘটনাটিই 'বোধিলাভ' নামে পরিচিত।
মহাপরিনির্বাণ লাভঃ সমস্ত জীবন ধরে তাঁর দর্শন এবং বাণী প্রচার করে অবশেষে আনুমানিক ৫৪৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ৮০ বছর বয়সে বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে কুশীনগরে ভগবান তথাগত মহাপরি নির্বাণ লাভ করেন।
গৌতম বুদ্ধ, বৌদ্ধ ধর্মের প্রবক্তা। তার জন্ম বর্তমান ভারত-নেপাল সীমান্ত সংলগ্ন নেপালের লুম্বিনি গ্রামে। পিতৃপ্রদত্ত বাল্যনাম সিদ্ধার্থ গৌতম। পরবর্তীতে আধ্যাত্মিক সাধনা ও জীবন নিয়ে নিজস্ব জ্ঞান-উপলব্ধির পর বুদ্ধ নামটি তিনি নিজেই গ্রহণ করেন। তাছাড়া যোদ্ধাজাতি শাক্য সম্প্রদায়ের সন্তান হওয়ায় তাকে 'শাক্যমুনি'ও বলা হয়। তার জন্ম ও মৃত্যু সাল অনিশ্চিত হলেও।
সংস্কৃত ‘বুদ্ধ’ শব্দের অর্থ যিনি পরম শাশ্বত বোধ বা জ্ঞান লাভ করেছেন। বৌদ্ধ ধর্মানুসারে তিনিই ‘বুদ্ধ’ যিনি জগতের সার সত্য সম্বন্ধে অবগত হয়েছেন এবং নিজে নির্বাণলাভের পূর্বে ধরিত্রীর সকল জীবকে নির্বাণলাভের উপায় উপদেশ করে গেছেন। পৃথিবীর জন্মলগ্ন থেকে আজ অবধি ২৮ জন বুদ্ধ গত হয়েছেন। আমরা এখন ২৮তম বুদ্ধ – গৌতম বুদ্ধ এর ধর্মকাল অবস্থান করছি, গৌতম বুদ্ধের ধর্মের ব্যপ্তিকাল মোট ৫০০০ বছর, বর্তমানে আমরা এই ধর্মকালের ২৫৫৪ বছরে আছি। আরো ২৪৪৬ বছর পর আরো একজন বুদ্ধ আবির্ভাব হবেন । তিনি হচ্ছেন 'মৈত্রীয় বুদ্ধ'।
পৃথিবীর জন্মলগ্ন থেকে আজ অবধি যেসব বুদ্ধ গত হয়েছেন, তারা হলেন :-
১। তৃষঙ্কর বুদ্ধ। ২। মেধঙ্কর বুদ্ধ। ৩। শরণংকর বুদ্ধ। ৪। দীপংকর বুদ্ধ।
৫। কোন্ডণ্য বুদ্ধ।৬। সুমঙ্গল বুদ্ধ। ৭। সুমন বুদ্ধ। ৮। রেবত বুদ্ধ।
৯। সোভিত বুদ্ধ। ১০। অনোমদর্শী বুদ্ধ। ১১। পদুম বুদ্ধ। ১২। নারদ বুদ্ধ
১৩। পদুমুত্তর বুদ্ধ। ১৪। সুমেধ বুদ্ধ। ১৫। সুজাত বুদ্ধ। ১৬। প্রিয়দর্শী বুদ্ধ।
১৭। অর্থদর্শী বুদ্ধ। ১৮। ধর্মদর্শী বুদ্ধ। ১৯। সিদ্ধার্থ বুদ্ধ। ২০। তিষ্য বুদ্ধ।
২১। ফুসস্ বুদ্ধ। ২২। বিপশী বুদ্ধ। ২৩। সিখী বুদ্ধ। ২৪। বেসস্ভূবুদ্ধ।
২৫। কুকুসন্ধ বুদ্ধ। ২৬। কোণাগমন বুদ্ধ। ২৭। কশ্যপ বুদ্ধ। ২৮। গৌতম বুদ্ধ।
গৌতম বুদ্ধ (পালি : গোতম) বা শাক্যমুনি বুদ্ধ হলেন বৌদ্ধ ধর্মের প্রবক্তা। জন্মের পর তাঁর নাম ছিল সিদ্ধার্থ গৌতম। আধ্যাত্মিক সাধনা ও জীবন নিয়ে নিজস্ব জ্ঞান-উপলব্ধির পর তিনি 'বুদ্ধ' নামটি গ্রহণ করেন।
তিনি মানুষকে মানুষ এবং প্রাণীকে প্রানীরূপেই জানতেন এবং সব প্রাণসত্তার মধ্যেই যে প্রাণ আছে, কষ্টবোধ আছে তা তিনি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতেন। তাই তিনি বলেছিলেন - ‘সবেব সত্তা ভবন্তু সুখীতত্ত্ব’। অর্থাৎ জগতের সব প্রাণী সুখী হোক। এই মর্মচেতনা জাগ্রত করার জন্য এবং এই পরম সত্য জানার জন্য তিনি ২৯ বছর বয়সে সংসার ত্যাগ করেন। সত্যের সন্ধানে পরিভ্রমণ করতে করতে এক সময় তিনি গয়ার উরুবেলায় (বুদ্ধগয়া) গিয়ে নিবিষ্টচিত্তে সাধনামগ্ন হন। দীর্ঘ ছয় বছর অবিরাম সাধনায় তিনি ৫৮৮ খৃষ্টপূর্বাব্দে, সম্যক সম্বুদ্ধ বা বুদ্ধত্ব লাভ করেছিলেন। সেদিনও ছিল বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথি।
বুদ্ধত্ব লাভের পর বুদ্ধদেব জীবের মুক্তি কামনায় ‘ধর্মচক্র প্রবর্তন সূত্র’ নামে জীবনের সর্ববিধ ক্লেশ থেকে মুক্তির উপায় আবিষ্কার করেন। তিনি "চতুরার্যসত্য" নামে খ্যাত এক তত্ত্বে জীবনে দুঃখের উৎপত্তি ও দুঃখভোগের কারণ, দুঃখ ভোগ এবং দুঃখ থেকে মুক্তির মার্গ নির্দেশ করেন। মুক্তির এই পথনির্দেশনাকে বলা হয় আর্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ। আমরা প্রত্যেকেই ছোটবেলায় সেই অষ্টাঙ্গিক মার্গ সম্পর্কে পড়েছিলাম। চলুন আরেকবার দেখি কি ছিল সেই আটটি পথ বা অষ্টাঙ্গিক মার্গ। সেগুলি হলো :-
১. সম্যক দৃষ্টি।
২. সম্যক সঙ্কল্প।
৩. সম্যক বাক্য।
৪. সম্যক কর্ম।
৫. সম্যক শিক্ষা।
৬. সম্যক প্রযত্ন।
৭. সম্যক স্মৃতি।
৮. সম্যক সমাধি।
বৈশাখ মাসের এই পূর্ণিমা দিবসে মহামানব বুদ্ধদেবের জীবনের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল বলে দিনটি ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’ নামে খ্যাত। সিদ্ধার্থের বুদ্ধত্বলাভের মধ্য দিয়েই জগতে বৌদ্ধধর্ম প্রবর্তিত হয়। এই দিনে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীগণ স্নান করে, শুদ্ধ বস্ত্র পরিধান করে মন্দিরে "বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি" "ধম্মং শরণং গচ্ছামি," "সংঘং শরণং গচ্ছামি" অর্থাৎ যার আক্ষরিক মানে করলে দাঁড়ায় "আমি বুদ্ধের শরণ নিলাম, আমি ধর্মের শরণাগত হলাম, আর আমি সংঘের শরণাগত হলাম"। কিন্তু প্রকৃত অর্থে কি তাই? আসলে বুদ্ধদেব কি বোঝাতে চাইলেন এই তিন মন্ত্রের মাধ্যমে?
বর্তমান যা পরিস্থিতি তাতেও কিন্তু লক্ষ্য করলে এই তিনটি বাণী অক্ষরে অক্ষরে মিলে যায়। অর্থাৎ "আমি বুদ্ধের শরণ নিলাম" মানে এই নয় আমি বুদ্ধদেবের শরণ নিলাম, ভালো করে ভেবে দেখলে দেখা যাবে তিনি বলছেন, আমাদের বৌদ্ধিক সত্তার শরণাগত হওয়া মানে আমাদের নিজেদের বুদ্ধিবলে, চেতনাবলে কোনটা ভালো, কোনটা মন্দ তার বিচার করতে শপথ নিলাম।
দ্বিতীয়ত, "আমি ধর্মের শরণাগত হলাম" মানে কোন ধর্ম? মানবধর্ম। অর্থাৎ মানুষের কল্যাণের জন্য যা শ্রেয়, সেটাই সবার পালন করা উচিত। তৃতীয়ত, "আমি সংঘের শরণাগত হলাম" অর্থাৎ কোন মন্দির মসজিদ গীর্জায় গিয়ে খোল করতাল নিয়ে হরিবোল নামগান করা, নামাজ পড়া, প্রেয়ার করা নয়। মানুষকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে একত্রিত হওয়া, জোটবদ্ধ করে তাঁদের লড়তে শেখানোর জন্য সংঘবদ্ধতার শপথ নেয়া। দেশ, মানুষ, সভ্যতা যখন বিপর্যয়ের মুখে তখন সকল শুভ শক্তির একত্রিত হওয়ার প্রয়োজন আছে, এটা বোঝানোই একজন রাজা বা শিক্ষাগুরুর কাজ। কারণ, তিনিও একজন রাজার পুত্র। কাজেই দেশ আর দশের খেয়াল রাখাটা তো তাঁর কর্তব্য।
আর সেটাই তিনি তাঁর তিনটি বানীর মধ্যে দিয়ে আমাদের বুঝিয়েছিলেন। যাই হোক, সবশেষে একটাই কথা বলার, যুগে যুগে এইভাবেই ভগবান নানা অবতারে এসে আমাদের সচেতন করেছেন। শুধুমাত্র আমাদের বোধগম্যতার অভাবে আমরা তা বুঝতে পারিনা। আশা রাখি আগামী ভবিষ্যতে আমরা বর্তমান জ্বালা যন্ত্রনা থেকে খুব শিগগিরি মুক্তি পাব।
এমনই এক বৈশাখী পূর্ণিমার দিনে তিনি আবির্ভূত হয়েছিলেন। শান্তির বারিধারায় অভিষিক্ত করেছিলেন এ পৃথিবীকে। দেশ-কাল-সময় পেরিয়ে তিনি আজও সমান প্রাসঙ্গিক। তাঁর বাণী আজও আমাদের পাথেয়। এ দুঃসময়ে সেই পরমকারুণিক বুদ্ধের প্রতি প্রণত আমাদের হৃদয়।
সর্বোপরি আমাদের দেশে যখন এতজন অবতারের আগমন ঘটেছে, তাঁদের মার্গদর্শন আমাদের পাথেয় হয়ে উঠুক এই কামনা করি। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। সকলকে পবিত্র বুদ্ধ পূর্ণিমার শুভেচ্ছা।
সূত্র: উইকিপিডিয়া/ অনলাইন /