National Online News Portal of Bangladesh - বাংলাদেশের জাতীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল - بوابة الأخبار الوطنية على الإنترنت لبنغلاديش - बांग्लादेश का राष्ट्रीय ऑनलाइन समाचार पोर्टल - بنگلہ دیش کا قومی آن لائن نیوز پورٹل
ছবি: আনন্দবাজার

আনন্দবাজারের প্রতিবেদন: লাঠি-গুলি-হুঙ্কার দিয়েও ‘দাবায়ে’ রাখা গেল না ছাত্র- জনতাকে! সেই আগষ্টেই পালাতে হল মুজিবকন্যাকে

  ।।বিকে আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।  সোমবার | আগস্ট ৫, ২০২৪ | ০৫:১৫ পিএম

শিক্ষার্থীদের (পড়ুয়াদের) বিক্ষোভ-আন্দোলন দমন করতে লাঠি-গুলি-হুঙ্কার— প্রায় সব অস্ত্রই ব্যবহার করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। গণবিক্ষোভের জেরে শুধু প্রধানমন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়াই নয়, বাংলাদেশও ছাড়তে হল শেখ হাসিনাকে। প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালের ১৫ অগস্ট নিজের বাসভবনে খুন করা হয়েছিল সপরিবার শেখ মুজিবর রহমানকে। আর কাকতালীয় ভাবে প্রায় ৫০ বছর পরের এক অগস্টে দেশ ছাড়তে হল মুজিবকন্যা হাসিনাকে।

এভাবেই বাংলাদেশ থেকে শেখ হাসিনার পলায়নের খবর নিয়ে প্রতিবেদন শুরু করেছে কলাকাতার বাংলা দৈনেক আনন্দবাজার।

উল্লেখ্য ছাত্রদের অসহযোগ আন্দোলন আর লং মার্চ টু ঢাকার মূখে আজ সোমবার ৫ আগস্ট দুপুরে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করার কিছু দিন আগে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রমনায় রেসকোর্স ময়দানে দাঁড়িয়ে ঐতিহাসিক ভাষণে মুজিবর বলেছিলেন, “আমাদের আর দাবায়ে রাখতে পারবা না।” বাংলাদেশ রাজনীতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, পড়ুয়াদের আন্দোলনকে ‘দাবায়ে’ রাখার চেষ্টা করেছিলেন হাসিনা। কিন্তু শেষমেশ নতুন করে ছাত্রবিক্ষোভ এবং হিংসা ছড়িয়ে পড়ার মাত্র তিন দিনের মাথায় প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হল হাসিনাকে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে গত কয়েক দিন ধরেই উত্তপ্ত ছিল বাংলাদেশ। প্রবল জনরোষের মুখে পড়ে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট কোটা সংস্কারের পক্ষে রায় দিলেও ন’দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। ধৃত আন্দোলনকারীদের মুক্তি, সমস্ত মামলা প্রত্যাহার, কোটা আন্দোলনে হামলাকারীদের শাস্তি-সহ আরও বিভিন্ন দাবি ছিল আন্দোলনকারী ছাত্রদের।

কিন্তু বিগত কয়েক সপ্তাহে পুলিশ-প্রশাসন এবং আওয়ামী লীগের যৌথ ‘হামলা’য় একের পর এক আন্দোলনকারী মারা গিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। নয় দফা দাবির পরিবর্তে একটি মাত্র দাবি নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন— হাসিনা সরকারের পদত্যাগ। অন্যথায় সর্বাত্মক অসহযোগের ডাক দেয় তারা।

‘প্রথম আলো’র প্রতিবেদন অনুসারে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘অসহযোগ কর্মসূচি’ ঘিরে যে অশান্তির সূত্রপাত হয়, তাতে কেবল রবিবারেই অন্তত ৯৮ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে ছিলেন ১৪ জন পুলিশকর্মীও। হামলা, পাল্টা হামলায় জখম হন শতাধিক মানুষ। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শাসকদল আওয়ামী লীগের কর্মী এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান আন্দোলনকারীরা।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রথম পর্বে আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের ‘রাজাকার’ বলে কটাক্ষ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। তবে আন্দোলনের নেপথ্যে বিএনপি, কট্টরপন্থী সংগঠন জামাতের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন হাসিনা। ছাত্রদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভে পুলিশের যথেচ্ছ গুলি-বন্দুক ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্র লীগ আন্দোলনরত পড়ুয়াদের থামাতে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন আন্দোলনকারীরা।

গত জানুয়ারি মাসে পঞ্চম বারের জন্য ঢাকার মসনদে বসেছিলেন হাসিনা। ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছিল প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এবং বাম দলগুলি। তাদের দাবি ছিল ‘নির্দল এবং নিরপেক্ষ’ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থাপনায় সাধারণ নির্বাচন। কার্যত বিরোধীহীন বাংলাদেশে হাসিনার কর্তৃত্ব ছিল নিরঙ্কুশ। কিন্তু নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পাওয়ার সাত মাস পরেই মসনদ ছাড়তে হল হাসিনাকে। গণআন্দোলনকে ‘দাবায়ে’ রাখতে পারলেন না হাসিনা।