পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মারা গেছেন।
বৃহস্পতিবার ৮ আগস্ট সকাল ৮টা ২০ মিনিটের দিকে দক্ষিণ কলকাতার পাম অ্যাভিনিউয়ে নিজের বাসায় মারা যান তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
আজ সকালে পরিবারের পক্ষ থেকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মৃত্যুর খবর জানান তাঁর সন্তান সুচেতন ভট্টাচার্য। আনন্দবাজার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা যায়।
সুচেতন বলেন, সকালে প্রাতরাশ করেন তিনি। এরপরই তিনি অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন। একপর্যায়ে বাসাতেই মৃত্যু হয় তাঁর।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট শাসনের দ্বিতীয় এবং শেষ মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন। ফুসফুস এবং শ্বাসনালিতে মারাত্মক রকমের সংক্রমণ ধরা পড়ে। হাসপাতালে প্রথম কয়েক দিন মূলত আচ্ছন্ন অবস্থাতেই ছিলেন বুদ্ধদেব। তবে ক্রমশ তিনি চিকিৎসায় সাড়া দেন। ১২ দিনের মাথায় ছেড়ে দেয়া হয় তাকে। বাড়িতে ফিরিয়েও অবশ্য কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে রাখা হয়েছিল তাকে।
দীর্ঘ দিন ধরেই গুরুতর শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় (সিওপিডি) ভুগছিলেন বুদ্ধদেব। অসুস্থতার কারণে শেষ কয়েক বছর কার্যত গৃহবন্দিই ছিলেন। আগেও একাধিক বার হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয় তাকে।
প্রসংগত, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য টানা পাঁচ দশক ধরে বাম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি সিপিএমের পলিটব্যুরোর সদস্য ছিলেন। রাজ্যে টানা ৩৪ বছর বাম শাসনের সর্বশেষ কান্ডারি ধরা হয় তাঁকে।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ২০০০ সালের ৬ নভেম্বর থেকে ২০১১ সালের ১৩ মে পর্যন্ত। আর উপমুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ১৯৯৯ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত। তিনি রাজ্য বিধানসভার সদস্য বা বিধায়ক ছিলেন ১৯৭৭ থেকে ১৯৮২ এবং ১৯৮৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত। ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রীও। ২০১১ সালে বুদ্ধদেবের বামফ্রন্টকে হারিয়ে রাজ্যে ক্ষমতায় আসেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কবি ও সাহিত্যিক হিসেবেও পরিচিতি ছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। তাঁর জন্ম ১৯৪৪ সালের ১ মার্চ। বর্ষীয়ান এ রাজনীতিক সর্বশেষ আলোচনায় এসেছিলেন ২০২২ সালে ভারত সরকারের দেওয়া রাষ্ট্রীয় সম্মান ‘পদ্মভূষণ’ প্রত্যাখ্যান করে। তিনি কবি সুকান্তের ভাইয়ের ছেলে।