ইসকনের এক নেতার গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির যেকোনো অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।
রাষ্ট্রপক্ষ আরো জানিয়েছে, এ বিষয়টি এখন সরকারের টপ প্রায়োরিটি। এরইমধ্যে এ ঘটনায় তিনটি মামলা হয়েছে। ৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৬ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চে এ তথ্য জানানো হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন এ তথ্য জানান।
তারা বলেন, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশে যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে।
এ সময় সরকারের নেওয়া এমন পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করে হাইকোর্ট বলেন, তারা এমন তড়িৎ পদক্ষেপে সন্তুষ্ট। তবে এ তৎপরতা জারি রাখতে হবে। কোনোভাবেই যাতে জানমালের ক্ষতি না হয় সে জন্যে সবোর্চ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকতে হবে।
এ সময় আইনজীবী মনির উদ্দিন বলেন, এখন ইসকন নিষিদ্ধের সময়। তখন আদালত বলেন, সরকার অবশ্যই দেখবে।
এর আগে বুধবার ২৭ নভেম্বর ‘ইসকন’ কি ধরনের সংগঠন, এই সংগঠনের রেজিস্ট্রেশন আছে কি না, কারা এই সংগঠনের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিষয়ে সরকার কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে কি না, তা জানতে চান হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষের মতামত জানতে জরুরি ভিত্তিতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে আদালতে ডেকে পাঠানো হয়। পরে ইসকন সম্পর্কে পূর্নাঙ্গ রিপোর্ট দাখিল করতে বলেন হাইকোর্ট।
ওইদিন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে ইসকনের কার্যক্রম নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন হাইকোর্টের নজরে এনে ইসকনের কার্যক্রম বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করতে আদালতের কাছে আবেদন করেন আইনজীবী মো. মনির উদ্দিন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় এক আইনজীবী নিহতের ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ইসকনের অনুসারীরা চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা শুরু করলে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ তাদের বাধা দেন। এরপর তাকে তুলে নিয়ে আদালতের প্রধান ফটকের বিপরীতে রঙ্গম টাওয়ারের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সাইফুলকে কুপিয়ে আহত করে ইসকন সদস্যরা। গুরুতর আহত অবস্থায় সাইফুলকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।