National Online News Portal of Bangladesh - বাংলাদেশের জাতীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল - بوابة الأخبار الوطنية على الإنترنت لبنغلاديش - बांग्लादेश का राष्ट्रीय ऑनलाइन समाचार पोर्टल - بنگلہ دیش کا قومی آن لائن نیوز پورٹل
ছবি: সংগৃহিত

এইচএসসির ফল তৈরিতে সাবজেক্ট ম্যাপিং শুরু: পরীক্ষার্থীদের তথ্য চেয়েছে শিক্ষা বোর্ড

  ।।বিকে রিপোর্ট।।  বৃহস্পতিবার | সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৪ | ১১:৫৫ এএম

ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের মুখে চলতি বছর ২০২৪ সালের এইচএসসি ও সমমানের স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল হওয়ায় জেএসসি–এসএসসির ফলাফলের সঙ্গে মিলিয়ে (ম্যাপিং) ফল প্রকাশের প্রস্তুতি নিয়েছে  শিক্ষা বোর্ডগুলো। বাতিল হয়ে যাওয়া এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রস্তুত করার প্রস্তাবনা এখনো প্রস্তুত করতে পারেনি শিক্ষা বোর্ডগুলো। তবে ফলাফল প্রস্তুত করতে পরীক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহ করা শুরু হয়েছে।

পরীক্ষার্থীদের জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার নম্বরপত্র-প্রবেশপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্য জমা দিতে জরুরি নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। আর একইসঙ্গে অনুষ্ঠিত পরীক্ষাগুলোতে অনুপস্থিত ও বহিষ্কৃত পরীক্ষার্থীদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। আগামী ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এসব তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কলেজগুলো অধ্যক্ষদের।

বুধবার ৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মো. আবুল বাশার স্বাক্ষরিত এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদের এসএসসি পাসের নম্বরপত্রের ফটোকপি (সংশ্লিষ্ট বোর্ড কর্তৃক যাচাইকৃত) এবং এইচএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্রের ফটোকপি অধ্যক্ষের মাধ্যমে সত্যায়ন করে ঢাকা বোর্ডের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শাখায় হাতে হাতে জমা দিতে হবে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে পরীক্ষার্থীদের তালিকা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শাখা হতে সংগ্রহ করতে হবে।

এইচএসসি পরীক্ষার সমতুল্য সনদধারী পরীক্ষার্থীদের জেএসসি বা সমমান (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ও এসএসসি বা সমমান পরীক্ষার একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট বা নম্বরপত্র (নম্বর/গ্রেড প্রদান পদ্ধতির প্রমাণক কাগজ পত্রসহ) ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সমতুল্য সনদ এবং এইচএসসি পরীক্ষার প্রবেশ পত্রের ফটোকপি অধ্যক্ষের মাধ্যমে সত্যায়ন করে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শাখায় হাতে হাতে জমা দিতে হবে।

বোর্ড আরও বলছে, সকল পরীক্ষার্থীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (বিষয় কোড-২৭৫) বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বর (শ্রেণি কার্যক্রম চলাকালে প্রাপ্ত) অনলাইনে প্রেরণ করে এর প্রিন্টকপি কেন্দ্রে সংরক্ষণ করতে হবে এবং মূলকপি (Final List) বোর্ডের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শাখায় হাতে হাতে জমা দিতে হবে। কোন অবস্থাতেই ব্যবহারিক পরীক্ষার অজুহাতে পরীক্ষার্থীদের কলেজে আনা যাবে না। আর অনুষ্ঠিত পরীক্ষাগুলোতে অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক অনুপস্থিত ও বহিষ্কৃত পরীক্ষার্থীদের তালিকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা-এর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শাখায় হাতে হাতে জমা দিতে হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অনুষ্ঠিত পরীক্ষাগুলোতে অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক স্বাক্ষরলিপি এককপি কেন্দ্রে সংরক্ষণ করে মূলকপি ঢাকা বোর্ডের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শাখায় হাতে হাতে জমা দিতে হবে। আগামী ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এসব তথ্য পাঠাতে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও অধ্যক্ষদের বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বার বার পরীক্ষা স্থগিতের পর গত ১১ অগাস্ট থেকে নতুন সূচিতে পরীক্ষা শুরুর কথা ছিল। কিন্তু সরকার পতনের পর সহিংসতায় বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি প্রশ্নপত্র পুড়ে গেলে পরীক্ষা ফের স্থগিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

স্থগিত পরীক্ষাগুলো আগামী ১১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল, সেজন্য নতুন সূচিও প্রকাশ করেছিল কর্তৃপক্ষ; কিন্তু এর মধ্যে পরীক্ষা দিতে অনাগ্রহী শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। পরে অন্তর্বর্তী সরকার তা আরও আরো দুই সপ্তাহ পিছিয়ে অর্ধেক প্রশ্নে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু ২০ অগাস্ট পাঁচ শতাধিক পরীক্ষার্থী পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে ঢুকে পরীক্ষা না দেয়ার দাবি তোলে। পরে সেদিনই সরকার তাদের দাবি মেনে নেয়।

এরপর শিক্ষা বোর্ডগুলোর কর্মকর্তারা বৈঠকে বসে দেড় মাসের মধ্যে ফল প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত নিলেও স্থগিত পরীক্ষার মূল্যায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে পারেননি। এর আগে কোভিড মহামারীর সময় উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা নিতে না পারায় আগের ফলাফলের ভিত্তিতে 'অটোপাস' দিয়েছিল শেখ হাসিনার সরকার।

এবারের মূল্যায়ন ফল প্রকাশের জন্য ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার অ্যাকাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, এইচএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্রের সত্যায়িত ফটোকপিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সব পরীক্ষাকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও অধ্যক্ষদের বোর্ডে পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে।

জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, বাতিল হয়ে যাওয়া এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রস্তুতে প্রস্তাবনা এখনও প্রস্তত হয়নি। বোর্ডগুলোর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকরা এটি নিয়ে কাজ করছেন।

আমরা পরীক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছি। প্রস্তাবনা প্রস্তুত ও তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন হওয়ার পর সাবজেক্ট ম্যাপিং বা যে উপায়ে ফল প্রস্তত করা হবে সে কার্যক্রম শুরু হবে।

তিনি আরও বলেন, সাধারণ ধারার পরীক্ষার্থীদের জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার তথ্য আমাদের কাছে আছে। যেসব এইচএসসি পরীক্ষার্থী ইংরেজি মাধ্যমের ও লেভেল পাস করে, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, কারিগরি বা মাদ্রাসা বোর্ড থেকে মাধ্যমিকের গণ্ডি পেড়িয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হয়েছেন তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

চেয়ারম্যান আরও বলেন, ফল প্রস্তুতের প্রস্তাবনা তৈরি হলে আমরা তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠাবো। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়ার পরে সে অনুসারে ফল প্রস্তুতের কাজ শুরু হবে।