বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারত কাজ করতে ইচ্ছুক। আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখব।
মঙ্গলবার ৩ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তলবে সাড়া দিয়ে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব এম রিয়াজ হামিদুল্লাহর সঙ্গে কথা বলার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ অভিমত ব্যক্ত করেন হাইকমিশনার।
প্রণয় ভার্মা বলেন, কোনো নির্দিষ্ট একটি ইস্যুকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক মূল্যায়ন করা যাবে না। আমরা আমাদের আলোচনা চলমান রাখব। আজকের বৈঠক তারই একটা অংশ।
আমাদের বিস্তৃত সম্পর্ক রয়েছে, পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে। আমরা একটি ইস্যু দিয়ে সেটি মূল্যায়ন করতে পারব না। আমাদের পরস্পর নির্ভরতার বিষয় রয়েছে। যেটি দুই দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক বহুমুখী। একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে দুই দেশের সম্পর্ক আটকে থাকবে না। আমরা দুই দেশের মানুষের সঙ্গে সংযোগ বাড়াতে আগ্রহী।
তিনি আরও বলেন, সর্বশেষ দুই মাসে আমাদের পারষ্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে ইতিবাচক কিছু উন্নয়ন হয়েছে। আমাদের অনেক ইতিবাচক বিষয় রয়েছে। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা অর্থনৈতিকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করে যাব।
এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে দেশটির হাইকমিশনারকে তলব করা হয়। ভারতীয় হাই কমিশনারকে তলব করলে বিকেলে তিনি মন্ত্রণালয়ে আসেন। ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে প্রায় আধা ঘন্টা বৈঠক করেন ভারতীয় হাইকমিশনার। এ সময় আগরতলার হামলার উল্লেখ করে নিন্দা ও কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামলার ঘটনা বাংলাদেশ সরকারকে গভীরভাবে ক্ষুব্ধ করেছে। ঘটনাপ্রবাহ দেখে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে হামলাটি পূর্বপরিকল্পিত। এ ঘটনা কূটনৈতিক সম্পর্কবিষয়ক ভিয়েনা সনদের লঙ্ঘন।বিকেল চারটার কিছু আগে প্রণয় ভার্মা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসেন।
উল্লেখ্য, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগরতলার ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ উল্লেখ করে বিবৃতি দিয়েছে। তারা বলেছেন, কূটনৈতিক ও কনস্যুলার সম্পত্তি কোনো অবস্থাতেই লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়। এ ঘটনায় ত্রিপুরায় মঙ্গলবার সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে রাজধানীর গুলশানে ভারতীয় হাইকমিশনে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। কোনো সংগঠন বা জনতা কমিশন ঘেরাও কর্মসূচি না এলেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ভারতের আগরতলায় সোমবার বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে ঢুকে হামলা চালানো হয়েছে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ‘কথিত’ অভিযোগ তুলে এ হামলা চালান হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু সংঘর্ষ সমিতিসহ কয়েকটি সংগঠনের সমর্থকেরা।